গুপ্ত যুগকে প্রাচীন ভারতীয় উপমহাদেশের স্বর্ণযুগ বলা হয়। এ যুগে সাহিত্য, বিজ্ঞান ও শিল্পের খুবই উন্নতি হয়।
প্রথম চন্দ্রগুপ্ত (৩২০-৩৪০ সাল)
ভারতে গুপ্তবংশের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন প্রথম চন্দ্রগুপ্ত। তিনি ৩২০ সালে পাটলিপুত্রের সিংহাসনে আরোহন করেন।
সমুদ্রগুপ্ত (৩৪০-৩৮০ সাল)

চন্দ্রগুপ্তের মৃত্যুর পর সমুদ্রগুপ্ত পাটলিপুত্রের (পাটনা) সিংহাসনে বসেন। তিনি ছিলেন গুপ্তবংশের শ্রেষ্ঠ রাজা। তাঁকে প্রাচীন ভারতের নেপোলিয়ন বলা হয়।
তাঁর আমলে সমতট ছাড়া বাংলার অন্যান্য জনপদ গুপ্ত সাম্রাজ্যের অধীনে ছিল। গুপ্ত অধিকৃত বাংলার রাজধানীও ছিল পুন্ড্রনগর।
দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত (৩৮০-৪১৫ সাল)
সমুদ্রগুপ্তের মৃত্যুর পর দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত পাটলিপুত্রের সিংহাসনে বসেন। তিনি মালবের উজ্জয়িনীতে সাম্রাজ্যের দ্বিতীয় রাজধানী স্থাপন করেন। ‘বিক্রমাদিত্য’ ছিল তার উপাধি। অনেক প্রতিভাবান ও গুণী ব্যক্তি তার দরবারে সমবেত হয়েছিলেন। এদের মধ্যে প্রধান নয়জনকে ‘নবরত্ন’ বলা হয়। তাঁর সভায় কালিদাস, বিশাখ দত্ত, নাগার্জুন, আর্যদেব, সিদ্ধাসেন, দিবাকর প্রমুখ কবি-সাহিত্যিকের সমাবেশ ঘটে। আর্যভট্ট এবং বরাহমিহির ছিলেন বিখ্যাত বিজ্ঞানী। আর্যভট্ট অন্য সবার আগে পৃথিবীর আহ্নিক গতি ও বার্ষিক গতি নির্ণয় করেন। আর্যভট্টের গ্রন্থের নাম ‘আর্য সিদ্ধান্ত’। বরাহমিহির ছিলেন একজন জ্যোতির্বিদ। তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থের নাম ‘বৃহৎ সংহিতা’। দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তের রাজত্বকালের ফা-হিয়েন নামক একজন পর্যটক ভারতে আসেন। তিনি ১০ বছর ভারতবর্ষে অবস্থান করেছিলেন। ফা-হিয়েন তাঁর ভারতে অবস্থানকালে তাঁর অভিজ্ঞতা সম্পর্কে ৭টি গ্রন্থ রচনা করেন। এর মধ্যে ‘ফো-কুয়ো-কিং’ বিশেষ উল্লেখযোগ্য।
৬ষ্ঠ শতকের প্রথমার্ধে ভারতে বিশাল সাম্রাজ্যের পতন ঘটে। মধ্য এশিয়ার দুর্ধর্ষ যাযাবর জাতি হুনদের আক্রমণে টুকরো টুকরো হয়ে যায় গুপ্ত সাম্রাজ্য।